MYCSSTRAP
The world biggest CSS Trap!!
* Biplob_Mondol

সম্পূরক খাদ্য


অধিক উৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য যোগানের পাশাপাশি পুকুরের বাইরে থেকে কিছু খাদ্য দেয়া হয়। বাইরে থেকে দেয়া এসব খাদ্যদ্রব্যকে সম্পূরক খাদ্য বলা হয়। চাউলের কুঁড়া, গমের ভুসি, সরিষার খৈল, ইত্যাদি মাছের সম্পূরক খাদ্য।
.
উপরিউক্ত ভাগ ছাড়া মাছের খাদ্যকে সাধারণভাবে নিম্নোক্ত ভাবেও শ্রেণীবিন্যাস করা যায়। যথা-
.
*. উদ্ভিজ খাদ্য (Plant feed)
*. প্রাণিজ খাদ্য (Animal feed)
*. মিশ্র খাদ্য (Mixed feed) এবং
*. তৈরি খাদ্য (Formulated feed)|
.
উদ্ভিজ খাদ্য
উদ্ভিদ বা উদ্ভিজ উৎস থেকে যে খাদ্য পাওয়া যায় তাদেরকে উদ্ভিজ খাদ্য বলা হয়। যথা- ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন, ক্ষুদে পানা, সবুজ ঘাস, নরম জলজ উদ্ভিদ, চালের কুঁড়া, সরিষার খৈল, গমের ভুসি ইত্যাদি।
.
প্রাণিজ খাদ্য
প্রাণী বা প্রাণিজ উৎস থেকে প্রাপ্ত খাদ্যকে প্রাণিজ খাদ্য বলা হয়। যথা- জুওপ্ল্যাঙ্কটন, ক্ষুদে জলজ কীটপতঙ্গ, গবাদি পশুর রক্ত, রেশমকীট, ফিশ মিল ইত্যাদি।
.
মিশ্র খাদ্য
উদ্ভিদ ও প্রাণী বা উভয় উৎসের খাদ্যদ্রব্য একত্রে মিশিয়ে যে খাদ্য তৈরি করা হয় তাকে মিশ্র খাদ্য বলা হয়। যথা- চাউলের কুড়া, গবাদি পশুর রক্ত, পুকুরের তলদেশের পচা জৈব পদার্থ ইত্যাদি।
.
তৈরি খাদ্য
বিভিন্ন খাদ্য উপাদান একত্রে মিশিয়ে যে সুষম খাদ্য তৈরি করা হয় তাকে তৈরি খাদ্য বলা হয়। দানাদার, বড়ি বা পিলেট আকারে তৈরি খাদ্য উৎপাদন করা হয়। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের তৈরি খাদ্য পাওয়া যায়। যথা- স্টাটার, গ্রোয়ার, ফিনিশার ইত্যাদি।
.
প্রাকৃতিক খাদ্য
কোন জলাশয়ের পানি ধারণের আধার হলো মাটি। মাটির গুণাগুণ পানির গুণাগুণকে প্রভাবিত করে। মাটি ও পানির স্বাভাবিক উর্বরতায় কোন জলাশয়ে যেসব খাদ্যদ্রব্য উৎপাদিত হয় সেগুলোকে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য বলা হয়। সার প্রয়োগের মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহ করে পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন করা যায়। প্রাকৃতিক খাদ্য মাছের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের প্রধান উৎস। কোন জলাশয়ের প্রাকৃতিক খাদ্যের পর্যাপ্ততা উক্ত জলাশয়ের প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা নির্দেশ করে।
প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎস
উদ্ভিদ-প্রাণী নির্বিশেষে পানিতে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যমান প্রায়সব জীবই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎস। এ ছাড়াও পানির তলদেশে ও কাদার উপরে অবস্থানকারী জীব নয় এমন পচা জৈববস্তুও মাছ প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। এসব পচা জৈববস্তুতে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া ও প্রোটোজোয়া লেগে থাকে, যেগুলো অধিক পুষ্টিমান সমৃদ্ধ এবং মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। মাছের এসব প্রাকৃতিক খাদ্য প্রধানত শিকার ও শিকারী এরূপ ভূমিকায় পরস্পরের মধ্যে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করে এবং খাদ্য, স্থান ইত্যাদির জন্য পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। জৈব বস্তুর এরূপ পারস্পরিক সম্পর্ককে খাদ্যচক্র বলা হয়। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপন্ন হয়।
.
জলজ পরিবেশে প্রাপ্ত মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যকে নিম্নরূপ ৬টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-
.
*. প্ল্যাঙ্কটন (plankton)
*. পেরিফাইটন (periphyton)
*. নেকটন (nekton)
*. নিউসটন (neuston)
*. বেনথোস (benthos) এবং
*. ম্যাক্রোফাইট (macrophyte)
.
প্ল্যাংঙ্কটন
.
পানিতে বিদ্যমান ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবকণা, অর্থাৎ আণুবীক্ষণিক প্রাণী ও উদ্ভিদকে প্ল্যাংঙ্কটন বলা হয়। প্ল্যাংঙ্কটন পানির ঢেউ বা স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটতে পারে না। স্রোত বা ঢেউয়ের তালে তালে এরা নিসিক্রয়ভাবে ভেসে বেড়ায়। প্ল্যাংঙ্কটন মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য। পানিতে প্ল্যাংঙ্কটন বেশি থাকা পুকুরের অধিক উৎপাদনশীলতা নির্দেশ করে। প্ল্যাংঙ্কটনের আধিক্যে পানির বর্ণ সবুজ বা বাদামী দেখায়। প্ল্যাংঙ্কটন দুই প্রকার, যথা-
.
*. উদ্ভিদ প্ল্যাংঙ্কটন (phytoplankton) এবং
*. প্রাণী প্ল্যাংঙ্কটন (zooplankton)।
.
উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটনঃ
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদই উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটন। এগুলোর বর্ণ সবুজ। উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটন মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রাথমিক উৎস।
যেমন- অ্যানাবেনা (Anabaena),
স্পাইরোগাইরা (Spirogyra),
নাভিকুলা (Navicula),
পলিটোমেল্লা (Polytomella),
পেডিয়েস্ট্রাম (Pediastrum),
সিনেডেসমাস (Scenedesmus),
ফেকাস (Phacus) ইত্যাদি।
.
প্রাণী প্ল্যাঙ্কটনঃ
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলজ প্রাণী ও কীটপতঙ্গের লার্ভাকে প্রাণী প্ল্যাঙ্কটন বলা হয়। প্রাণী প্ল্যাঙ্কটন মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের দ্বিতীয় বা মধ্যম পর্যায়ের উৎস। জুওপ্ল্যাঙ্কটন প্রাণিজ খাদ্যের প্রথম উৎস।
যেমন-
ড্যাফনিয়া (Daphnia), সাইক্লপ্স্ (Cyclops), ডায়াপটোমাস (Diaptomus), কেরাটেল্লা (Keratella), ফিলিনিয়া (Filinia), ব্রাকিওনাস (Brachionus), পলিআর্থ্রা (Polyarthra) ইত্যাদি।
.
পেরিফাইটন
পেরিফাইটন হলো ঐসব ক্ষুদে উদ্ভিদ ও প্রাণী যারা শিকড়যুক্ত ও অপেক্ষাকৃত বড় জলজ উদ্ভিদের শাখা প্রশাখায় লেগে থাকে বা পানির তলদেশের শক্ত কোন আশ্রয়ে দৃঢ়ভাবে অবস্থান করে জীবন যাপন করে।
.
নেকটন
অপেক্ষাকৃত বড় ধরনের জলজ প্রাণী যারা মুক্তভাবে সাঁতার কাটতে পারে এবং স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে, তাদেরকে নেকটন বলা হয়। নেকটন প্ল্যাঙ্কটন নেটে ধরা পড়া থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে। যথা- ওয়াটার বীট্ল, ক্ষুদে উভচর প্রাণী, জলজ পোকা মাকড় ইত্যাদি।
.
নিউসটন
পানির উপরিভাগে ঝুলে থেকে বা ভাসমান অবস্থায় সাঁতাররত বা বিশ্রামকারী জীবকে নিউসটন বলা হয়।
যথা- প্রোটোজোয়া, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি।
.
ব্যানথোস
পানির তলদেশে কাদার উপরিভাগে বা কাদার মধ্যে বসবাসকারী জীবকে ব্যানথোস বলা হয়। যথা- শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি।
.
ম্যাক্রোফাইট
অপেক্ষাকৃত বড় ধরনের জলজ উদ্ভিদকে ম্যাক্রোফাইট বলা হয়। যথা- ক্ষুদেপানা, কুটিপানা ইত্যাদি।
.
[see the the next part- মাছ চাষে প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা । (পর্ব - ৩)]
2016-01-13 20:38 (edited 2016-01-13 20:55 by Biplob_Mondol ) · (0)

Online: Guests: 1
Go to top

Snack's 1967